বিশ্ব বাবা দিবস কবে ২০২৫ | Father's Day 2025 কবে পালন করা হবে?

তৃতীয় লিঙ্গ কি সন্তান জন্ম দিতে পারে? বাস্তব ও বিজ্ঞান

তৃতীয় লিঙ্গ ও সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা: একটি বাস্তবধর্মী বিশ্লেষণ

মানবজীবনের জটিলতম বৈচিত্র্যের একটি দিক হলো লিঙ্গ পরিচয়। সাধারণত মানুষকে দুইটি প্রধান লিঙ্গ—পুরুষ ও নারী—হিসেবে ভাগ করা হলেও, প্রকৃতিতে এর বাইরে আরও কিছু লিঙ্গ বৈচিত্র্য বিদ্যমান। এই প্রেক্ষাপটে তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া সম্প্রদায় সম্পর্কে অনেকের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগে, যার মধ্যে অন্যতম হলো—তারা কি সন্তান জন্ম দিতে পারেন?


তৃতীয় লিঙ্গ বলতে কী বোঝায়?

তৃতীয় লিঙ্গ বলতে সাধারণত এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যাদের শারীরিক বা লিঙ্গগত বৈশিষ্ট্য প্রচলিত পুরুষ বা নারীর সংজ্ঞার মধ্যে সম্পূর্ণভাবে পড়ে না। এদের মধ্যে কয়েকটি পরিচিত শ্রেণি হলো:

ইন্টারসেক্স: জন্মগতভাবে যাদের যৌনাঙ্গ বা ক্রোমোজোম নারী ও পুরুষ উভয়ের বৈশিষ্ট্য বহন করে, তাদের ইন্টারসেক্স বলা হয়।

ট্রান্সজেন্ডার: জন্মগতভাবে পুরুষ বা নারী হলেও যাদের লিঙ্গ পরিচয় (gender identity) তাদের জৈবিক লিঙ্গের সঙ্গে মেলে না, তারা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে পরিচিত।

হিজড়া সম্প্রদায়: দক্ষিণ এশিয়ায় হিজড়া নামে পরিচিত অনেক ব্যক্তি ট্রান্সজেন্ডার, ইন্টারসেক্স বা অন্য কোনো লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।

তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা

তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরা সন্তান জন্ম দিতে পারেন কি না, তা একেবারে নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়, কারণ এটি একাধিক শারীরবৃত্তীয় ও জেনেটিক কারণের ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণভাবে বলা যায়:

যদি কেউ জন্মগতভাবে নারীর প্রজনন অঙ্গ (যেমন ডিম্বাশয় ও জরায়ু) নিয়ে জন্মান, তবে তারা স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিতে পারেন।

যদি কেউ পুরুষের প্রজনন অঙ্গ (যেমন শুক্রাণু উৎপাদনকারী অঙ্গ) নিয়ে জন্মান, তবে তারা সন্তান জন্মদানে সক্ষম হতে পারেন।

অনেক ইন্টারসেক্স ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রজনন অঙ্গ সম্পূর্ণরূপে গঠিত বা কার্যকর নাও হতে পারে, ফলে তারা প্রজননে অক্ষম হতে পারেন।

যদি কোনো ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি হরমোন থেরাপি বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করেন, তবে তাদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

উপসংহার

সব তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি সন্তান জন্ম দিতে পারেন না, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি সম্ভব হতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের প্রজনন অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করে। এটি মূলত নির্ভর করে ব্যক্তির জন্মগত শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থার ওপর।

বিষয়টি সংবেদনশীল হলেও, সচেতনতা বৃদ্ধি ও বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা সম্ভব। আমাদের উচিত বৈচিত্র্যকে সম্মান করা ও প্রতিটি মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা।


আপনার মতামত জানাতে বা এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে কমেন্ট করুন!

মন্তব্যসমূহ